Blog

  • শিশু-কিশোরদের ক্ষতি করছে অ্যানার্জি ড্রিংক

    শিশু-কিশোরদের ক্ষতি করছে অ্যানার্জি ড্রিংক

    সিগারেট ও মদ শিশু-কিশোরদের নাগালের বাইরে রাখতে জার্মানিতে অনেক বিধিনিয়ম রয়েছে৷ কিন্তু ক্ষতিকারক এনার্জি ড্রিংকসের ক্ষেত্রে তেমন উদ্যোগ নেই৷ ডাক্তার ও কর্মীরা মনে করছেন এনার্জি ড্রিংকসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত৷ অনেক ইউটিউব ও ইন্টারনেট তারকার মিষ্টি পানীয় রঙিন, চকচকে ও নজর কাড়ার মতো৷ এমন আইস টি অথবা এনার্জি ড্রিংক শিশু-কিশোরদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়৷ লুকা, হানেস ও ইয়ুস্টুসের মতো ফুটবল অনুরাগীদের বয়স ১৩ থেকে ১৪৷ এরাই এমন পানীয়ের ক্রেতা হিসেবে কোম্পানিগুলির কাছে আকর্ষণীয়৷ এনার্জি ড্রিংক অবশ্যই তাদের পরিচিত৷ কেউ মাঝেমধ্যে খায়, তবে বেশিরভাগ সময়ে গোপনে৷ কেউ বা একবার চেখে দেখেছে৷ কেউ কেউ কখনোসখনো একটি ক্যান কিনেছে৷ কিন্তু তাদের পরিচিত মহলে এবং ফুটবল টিমে বিষয়টি নাকি অন্যরকম৷

    ১৩ বছর বয়সী হানেস মতে, অনেকে পানির বোতলে এনার্জি ড্রিংক ভরে নেয়, যাতে কোচ টের না পায়৷

    ১৪ বছর বয়সী ইয়ুস্টুস জানালো, আমি দুই একজন বা আরো বেশি মানুষকে চিনি, যারা স্কুলের আগে রেডবুল বা অন্য কোনো পানীয় জোগাড় করে৷ কখনো স্কুলে, কখনো বা স্কুলের পর সেটা খেয়ে নেয়৷

    সুপারমার্কেট, পেট্রল পাম্প অথবা পাড়ার ছোট স্টলে এনার্জি ড্রিংকের বিশাল সম্ভার দেখা যায়৷ অনেক পরিমাণ চিনির পাশাপাশি সেই পানীয়ের মধ্যে টাউরিন নামের পদার্থ ও বিশাল মাত্রায় ক্যাফেইন থাকে৷ এমনকি শিশুরাও বিনা বাধায় সেই পানীয় কিনতে পারে৷ এক শিশুদের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ এমন অনেক শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন, যারা প্রতিদিন বেশ কয়েক লিটার এনার্জি ড্রিংক পান করে থাকে৷

    পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে মার্টিন হুল্পকে-ভেটে বলেন, কয়েকটি ক্ষেত্রে রোগীরা বলে যে, তাদের খুব দ্রুত হৃদস্পন্দন হচ্ছে, যা তাদের খুবই অস্থির করে তুলছে৷ কয়েকজন রোগীর ক্ষেত্রে রক্তচাপ বাড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়৷ যারা নিয়মিত ও বেশি পরিমাণে এই পানীয় গ্রহণ করে, তাদের ক্ষেত্রে আমরা আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় কার্ডিয়াক পেশী প্রাচীর আরো পুরু হতে দেখি৷ সেটা খুবই উদ্বেগজনক৷

    এই বিশেষজ্ঞের মতে, খুব খারাপ অবস্থায় কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়াস দেখা দিতে পারে, যা রোগীর জীবন বিপন্ন করতে পারে৷ জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের ভোক্তা সুরক্ষা দপ্তরের কর্মী ইরিস লাকুয়া বিভিন্ন স্কুলের ক্লাসে গিয়ে শিশুদের এনার্জি ড্রিংকসের ঝুঁকির কারণ ব্যাখ্যা করেন৷ এমন পানীয়ের উপকরণ সম্পর্কেও তিনি তথ্য দেন৷ তবে ক্যানের উপর সেই তালিকা পড়া প্রায়ই বেশ কঠিন৷

    লাকুয়া বলেন, সত্যি ভালো করে খুঁজতে হয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সতর্কতাবাণী থাকে, যে অনেক ক্যাফেইনের কারণে সেটি গর্ভবতী ও স্তন্যপান করানো নারী এবং শিশুদের জন্য উপযুক্ত নয়৷ ক্যানের উপর সেই বার্তা স্পষ্ট দেখা গেলে ভালো হতো৷

    একটি আধ লিটারের এনার্জি ড্রিংকের মধ্যে প্রায় ২০টি সুগার কিউবের সমান পরিমাণ এবং ১৬০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে৷ ৫০ কিলো ওজনের এক কিশোর এমন একটি ড্রিংক পান করলে তার বয়সের জন্য নির্ধারিত ক্যাফেইনের ঊর্ধ্বসীমা পেরিয়ে যায়৷ সে কারণে ডাক্তার ও ভোক্তা সুরক্ষা কর্মীরা শিশু ও কিশোরদের কাছে এমন পানীয় বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞার দাবি করছেন৷ কিন্তু সেই বিষয়ের ভারপ্রাপ্ত ফেডারেল মন্ত্রণালয়ের এই মুহূর্তে এমন কোনো পরিকল্পনা নেই৷ ফলে শিশু ও কিশোরদের কাছে এনার্জি ড্রিংকসের জনপ্রিয়তা আপাতত তুঙ্গেই থাকছে৷

     

  • ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ক্যানসারে হয় না: গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

    ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ক্যানসারে হয় না: গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

    যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোল্ড স্প্রিং হার্বার ল্যাবরেটরির (সিএসএইচএল) প্রফেসর ও গবেষক বো লির নেতৃত্বে পরিচালিত একটি গবেষণায় ক্যানসার নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে—ক্যানসার নয়, বেশির ভাগ ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয় ‘ক্যাচেক্সিয়া’ রোগে। প্রফেসর বো লি আরও বলেছেন, ‌‌এটি খুবই মারাত্মক একটি সিনড্রোম।

    গবেষকরা দেখেছেন যখন ক্যানসারের টিউমার— ইন্টারলিউকিন-৬ (আইএল-৬) নামের একটি রোগ প্রতিরোধ অণুর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, তখন এটির কারণে মারাত্মকভাবে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়। এ কারণে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্যানসার রোগীর ‘ক্যাচেক্সিয়া’ রোগ হয়। সূত্র: ইন্দো এশিয়া নিউজ সার্ভিস

    ন্যাচার কমিউনিকেশন নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এই গবেষক আরও বলেছেন, ‌বেশিরভাগ ক্যানসার রোগীর মৃত্যু ক্যানসারের বদলে ক্যাচেক্সিয়ায় হয়। এখান থেকে ফেরার কোনো উপায় নেই। মূলত এই রোগের কোনো চিকিৎসাও নেই।

    একটি ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে এই প্রফেসর ও তার দল দেখেছেন, মস্তিষ্কের ‘এরিয়া পোসট্রেমা’ নামের একটি নিউরনে আইএল-৬ নামের রোগ প্রতিরোধী অণু প্রবেশে বাধা প্রধান করলে ইঁদুরের মধ্যে ক্যাচেক্সিয়া হয় না। প্রফেসর বো লি জানান, ভবিষ্যতে এসব নিউরন লক্ষ্য করে ওষুধ প্রয়োগ করে ক্যানসার ক্যাচেক্সিয়াকে একটি চিকিৎসাযোগ্য রোগে পরিণত করা যাবে।

    গবেষকরা বলছেন, প্রচুর পরিমাণে আইএল-৬ উৎপাদিত হওয়ায় ক্যানসার এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। যেটি শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। যার মধ্যে অন্যতম হলো মানুষ ও প্রাণী খাবার খাওয়া ছেড়ে দেবে। অপরটি হলো ক্যাচেক্সিয়া হওয়া।

    তার আরও জানান, সুস্থ রোগীদের মধ্যে আইএল-৬ একটি প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে। এই অণু পুরো শরীরে প্রবাহিত হয়। যখন কোনো হুমকির সঙ্গে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা কাজ করে— তখন এটির বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করতে মস্তিষ্ককে সতর্ক করে দেয়।

     

  • জুমার দিনে বিশেষ ৪ আমল

    জুমার দিনে বিশেষ ৪ আমল

    জুমার দিন মুসলমানদের কাছে পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। দিনটিকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। এ বিষয়ে রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ এ দিনটিকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিনরূপে নির্ধারণ করেছেন। তাই যে ব্যক্তি জুমার নামাজ আদায় করতে আসবে সে যেন গোসল করে এবং সুগন্ধি থাকলে তা শরীরে লাগায়। মিসওয়াক করাও তোমাদের কর্তব্য। (সুনানে ইবনে মাজা)

    জুমার দিনে বিশেষ আমল

    দোয়া করা

    জুমার দিনের দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন। তাই এদিন আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করা উচিত। হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জুমার দিনে এমন একটা সময়ে রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর ক‍াছে যা চাই আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আছরের শেষ সময়ে তা তালাশ কর। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮, নাসাঈ, হাদিস : ১৩৮৯)

    বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা

    জুমার দিনের ফজিলতপূর্ণ আরেকটি আমল হচ্ছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। রাসুল (সা.) বলেন, দিনসমূহের মধ্যে জুমার দিনই সর্বোত্তম। এ দিনে আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এ দিনে শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। এ দিনে সমস্ত সৃষ্টিকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব তোমরা এ দিনে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ কর। কেননা, তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)

    তাড়াতাড়ি মসজিদে আগমন

    হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলকে (সা.) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে (জুমার নামাজের পূর্বে স্ত্রী-সহবাস করে তাকেও গোসল করাবে) এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে। এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)

    সুরা কাহাফ তিলাওয়াত

    জুমার দিনে সুরা কাহাফ তিলাওয়াতের অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, তার (ঈমানের) নুর এ জুমা হতে আগামী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে। (মিশকাত ২১৭৫)।

    হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। (সহিহ মুসলিম : ৮০৯, আবু দাউদ : ৪৩২৩)

    হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, সে ৮ দিন পর্যন্ত সব ধরনের ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকেও নিরাপদ থাকবে।

     

  • অভাবমুক্ত থাকার আমল

    অভাবমুক্ত থাকার আমল

    মাঝে মাঝে মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মহান আল্লাহ অভাব-অনটন, বিপদ-আপদ দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর আমরা তোমাদেরকে অবশ্যই পরীক্ষা করব (১) কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা। আর আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদেরকে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৫)

    অভাবমুক্ত থাকার আমল

    ১. আখিরাতকে প্রাধান্য দেওয়া : আখিরাতকে প্রাধান্য দিলে মহান আল্লাহ শান্তি দান করেন। আর দুনিয়াকে প্রাধান্য দিলে মহান আল্লাহ অভাব, হতাশা ইত্যাদি বাড়িয়ে দেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১০৭)

    ২. সংযত জীবনাচার : রাসুলের (সা.) যুগে যখন মদিনায় দুর্ভিক্ষ এসেছিল, তখন থেকে উম্মতকে বাঁচাতে সবাইকে তিনি জীবনাচারে সংযত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইবনে ওমর (রা.) বলতেন, (অভাবের দিনে) রাসুলুল্লাহ (সা.) কাউকে তার ভাইয়ের অনুমতি ছাড়া একসঙ্গে দুটি করে খেজুর খেতে নিষেধ করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ২৪৫৫)

    ৩. কঠিন সময়ে ধৈর্য ধারণ : দুঃসময়ে ধৈর্য ধারণও এক ধরনের নেক আমল এবং এটি একটি ফরজ ইবাদত। খাদ্যসংকট বা দুর্দিনে রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম ধৈর্যসহকারে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতেন।

    ৪. গুনাহ ছেড়ে দেওয়া : রিজিকের অভাব-অনটনের একটি কারণ হচ্ছে পাপাচার। তাই রাসুল (সা.) উম্মতদের অভাব-অনটন থেকে বাঁচাতে পাপাচার থেকে দূরে থাকার তাগিদ দিতেন। সাওবান (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ তার পাপকাজের কারণে তার প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০২২)

    ৫. বেশি পরিমাণ দোয়া করা : অভাব-অনটন এবং দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা পাওয়ার আরেকটি আমল হলো বেশি বেশি দোয়া করা। মহান আল্লাহর কাছে অতীতের গুনাহগুলো থেকে তওবা করে, পরিস্থিতি অনুকূলে এনে দেওয়ার জন্য দোয়ায় মগ্ন হয়ে যাওয়া। অনেক ক্ষেত্রে দোয়ার মাধ্যমেও বহু সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। রাসুল (সা.) দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি পেতে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করেছিলেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৬৪)

     

  • বিপদে ধৈর্য ধারণ করার প্রতিদান

    বিপদে ধৈর্য ধারণ করার প্রতিদান

    বিপদ মানুষকে আল্লাহর দিকে ধাবিত করে। বান্দার ওপর যখন বিপদ আসে তখন সে আল্লাহর কাছে ফিরে আসে। তাই আল্লাহ বান্দাকে ছোট-বড় বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যারা তাদের ওপর বিপদ এলে বলে, আমরা তো আল্লাহরই। আর নিশ্চয়ই আমরা তার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।

    পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)

    বিপদে ধৈর্য ধারণ করার প্রতিদান

    কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা তাদের রবের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সবর করে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদের যে রিজিক প্রদান করেছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং ভালো কাজের মাধ্যমে মন্দকে দূর করে, তাদের জন্যই রয়েছে আখিরাতের শুভ পরিণাম। স্থায়ী জান্নাতসমূহ, যাতে তারা এবং তাদের পিতৃপুরুষগণ, তাদের স্ত্রীগণ ও তাদের সন্তানদের মধ্যে যারা সৎ ছিল তারা প্রবেশ করবে। আর ফেরেশতারা প্রতিটি দরজা দিয়ে তাদের নিকট প্রবেশ করবে। তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, কারণ তোমরা ধৈর্য ধারণ করেছিলে। কতই না উত্তম পরকালের এই ঘর!’ (সুরা আর-রাদ, আয়াত ২২-২৪)

    আনাস ইবনু মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রকৃত ধৈর্য ধারণ করা হলো বিপদ-আপদের প্রথম মুহূর্তে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২০১১)

    আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, কিছুসংখ্যক আনসার সাহাবি রাসুলুল্লাহর (সা.) নিকট কিছু চাইলে তিনি তাদের দিলেন। পুনরায় তারা চাইলে রাসুল (সা.) তাদের আবারও দিলেন। এমনকি তার (রাসুল সা.) নিকট যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, আমার নিকট যে মাল থাকে তা তোমাদের না দিয়ে আমার নিকট জমা রাখি না। তবে যে যাঞ্চা (প্রার্থনা, যাচনা) থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখেন। আর যে পরমুখাপেক্ষী না হয়, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহ তাকে সবর দান করেন। সবরের চাইতে উত্তম ও ব্যাপক কোনো নিয়ামত কাউকে দেওয়া হয়নি। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৩৮৪)

    আবু সাঈদ খুদরি ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুসলিম ব্যক্তির ওপর যেসব যাতনা, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আপতিত হয়, এমনকি যে কাটা তার দেহে বিদ্ধ হয়- এসবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫২৩৯)

     

  • রাসুল (সা.) যাকে সবচেয়ে বড় কৃপণ বলেছেন

    রাসুল (সা.) যাকে সবচেয়ে বড় কৃপণ বলেছেন

    একজন মুমিনের আমলের পাল্লা ভারী করতে এবং নবিজি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় হতে বেশি বেশি দরুদ পড়া উচিত। যে ব্যক্তি নবিজির প্রতি দরুদ পড়ে না এবং কোথাও রাসুল (সা.)-এর নাম উচ্চারণ হলে দরুদ না পড়ে চুপ থাকে, তাকে হাদিসে কৃপণ বলা হয়েছে।

    হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলাম। তিনি বললেন, ‘তোমাদেরকে কি বলে দেব না, সবচেয়ে বড় কৃপণ কে?’ সবাই বললেন, ‘অবশ্যই হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, ‘যার সামনে আমার নাম উল্লেখ করা হল, অথচ সে (আমার নাম শুনেও) আমার প্রতি দরুদ পড়ল না, সেই হল সব চাইতে বড় কৃপণ।’ (আত তারগীব, হাদিস, ১৬৮৪)

    হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ নবির ওপর রহমত অবতীর্ণ করেন এবং ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দোয়া করেন। সুতরাং হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি দরুদ পড়ো এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও। (সুরা আহজাব, আয়াত : ৫৬)

    রাসুল (সা.) প্রতি দরুদ পাঠের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবিজি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ প্রেরণ করবে আল্লাহতায়ালা তার ওপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। (সহিহ মুসলিম)।

    রাসূলের প্রতি দরুদ পাঠকারী ব্যক্তি কেয়ামতের দিন রাসূলের কাছে থাকবে। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কেয়ামত দিবসে লোকদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আমার অধিক নিকটতম হবে, যে ব্যক্তি তাদের মধ্যে আমার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করবে। (তিরমিজি)।

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ পড়লে ফেরেশতারা তা তার কাছে পৌঁছিয়ে দেন। এক হাদিসে হজরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘পৃথিবীতে মহান আল্লাহর ভ্রমণরত বহু ফেরেশতা রয়েছেন, যারা আমার উম্মতের কাছ আমাকে সালাম পৌঁছে দেন।’ (আহমাদ ৩৬৬৬, ৪২১০, ৪৩২০, নাসাঈ ১২৮২, ইবনে হিব্বান ৯১৪, তারগীব ১৬৬৪ নং)

     

  • অতিবৃষ্টি থেকে বাঁচার দোয়া

    অতিবৃষ্টি থেকে বাঁচার দোয়া

    আল্লাহর অসংখ্য নেয়ামতের মধ্যে একটি হলো বৃষ্টি। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ থেকে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে তোমাদের জীবিকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফলমূল উৎপন্ন করেন।’ তবে অতি বৃষ্টির ফলে বন্যা, ভূমিধস, পাহাড়ধসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। তাই অতি বৃষ্টি থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত।

    অতিবৃষ্টি থেকে বাঁচার দোয়া

    হযরত আনাস (রা.) বলেন, একবার জুমার দিন রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন এক সাহাবি মসজিদে ঢুকে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, (অনাবৃষ্টির কারণে) জীবজন্তু মরে গেছে। পথ বন্ধ হয়ে গেছে। আল্লাহ তাআলার কাছে আমাদের জন্য বৃষ্টির দোয়া করুন।’ তখন রাসুল (সা.) দুই হাত উঠিয়ে দোয়া করতে শুরু করেন,

    ‘আল্লাহুম্মাসকিনা, আল্লাহুম্মাসকিনা, আল্লাহুম্মাসকিনা।’

    অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমাদের বৃষ্টি দান করুন। হে আল্লাহ, আমাদের বৃষ্টি দান করুন। হে আল্লাহ, আমাদের বৃষ্টি দান করুন।’

    আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর কসম! তখন আকাশে বিন্দুমাত্র মেঘের ছোঁয়াও ছিল না, রাসুলের (সা.) দোয়ার পর আকাশে মেঘের উদয় হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো আকাশ মেঘে ছেয়ে যায়। এরপর মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয়।

    বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর কসম! পরের ছয় দিন আমরা সূর্য দেখিনি। পরের জুমায় ফের ওই ব্যক্তি যখন মসজিদে প্রবেশ করেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবা দিচ্ছিলেন। ওই ব্যক্তি আরজ করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, ধনসম্পদ সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পানিতে পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার দোয়া করুন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) দুই হাত উঁচিয়ে দোয়া করলেন,

    ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার।’

    অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ, পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোয় বৃষ্টি দিন।’

    আনাস (রা.) বলেন, তখনই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়, এরপর আমরা নামাজ শেষে রোদের মধ্যে বের হই।

     

  • বিকেলের নাস্তায় ঝটপট পটেটো ফিঙ্গার

    বিকেলের নাস্তায় ঝটপট পটেটো ফিঙ্গার

    বাইরের দোকানের যেকোনো খাবারের তুলনায় ঘরে তৈরি খাবার অনেক স্বাস্থ্যসম্মত। আর তা যদি নিজের হাতে তৈরি করা যায়, তাহলে তো আর কথাই নেই। ঘরেই অল্প উপকরণ দিয়ে পটেটো ফিঙ্গার পরিবেশন করে চমকে দিতে পারেন আপনার প্রিয়মুখগুলোকে। এই পটেটো ফিঙ্গার বাচ্চাদেরকেও নাস্তা হিসেবে দিতে পারেন। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক মজাদার পটেটো ফিঙ্গার তৈরির রেসিপি।

    যা যা লাগবে:

    আলু ৫-৬টি ( সিদ্ধ করে চটকে নেওয়া), কর্নফ্লাওয়ার বা চালের গুড়া ১/২ কাপ, লবণ স্বাদমত, চাট মসলা স্বাদমত, তেল ১/২ কেজি (ভাজার জন্য)

    তৈরি করবেন যেভাবে:

    আরও পড়ুন

    প্রথমে আলু সেদ্ধ করে নিতে হবে। এবার সেদ্ধ আলু ভালোভাবে চটকে এর মধ্যে লবণ, চাট মসলা, কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে ভালোভাবে মেশাতে হবে। এরপর মিশ্রণটি একটি জিপব্যাগে ভরে ব্যাগের মুখটি ভালোভাবে বন্ধ করতে হবে। এবার মিশ্রণটি হাত দিয়ে চেপে সমান করে প্যাকেট থেকে বের করে নিন। এখন এই মিশ্রণের ওপর ছুরি দিয়ে লম্বা লম্বা করে আঙ্গুলের মত করে শেপ দিয়ে নিতে হবে। যখন সবগুলো তৈরি হয়ে যাবে তখন চুলায় একটি কড়াইতে পর্যাপ্ত তেল দিয়ে গরম করে নিতে হবে। গরম হয়ে গেলে সবগুলো ফিঙ্গার দিয়ে দিতে হবে।

    যখন সবগুলো ফিঙ্গার বাদামি কালার হয়ে আসবে তখন একটি ছাকনি দিয়ে টিস্যাুর ওপর নিয়ে বাড়তি তেল জড়িয়ে নিতে হবে। এখন পছন্দের সস বা মেয়োনিজ এর সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করা যাবে মচমচে পটেটো ফিঙ্গার।

     

  • ডিমের কুসুমে তৈরি ৪ ফেসপ্যাকেই ফিরবে উজ্জ্বলতা

    ডিম যেকোন বয়সী মানুষের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষ করে ত্বকের কালার উজ্জ্বল বা বাদামী রাখার জন্য ডিম বেশ উপকার করে। রূপচর্চায় ডিম ব্যবহার নতুন নয়। তবে মূলত, চুলের যত্নেই ডিম ব্যবহার করতে দেখা যায় বেশি। আপনি চাইলে ডিম দিয়ে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন। প্রাচীনকাল থেকে মেয়েদের ত্বকের ক্ষেত্রে ডিম ব্যবহার করে আসছে। তাহলে জেনে নিন ডিম দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি।

    রূপ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিমের কুসুম ত্বক উজ্জ্বল রাখতে দারুণ কাজ করে।

    জেনে নিন ডিম দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাকের ব্যবহার

    ১) তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হওয়ার প্রবল সম্ভবনা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে একটি ডিমের কুসুম, এক চামচ মধু এবং এক চামচ বাদাম তেল নিয়ে তা ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর ত্বকে প্যাকটি ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

    বৃষ্টির সময়ও ফ্যাশনেবল থাকবেন যে ৫ টিপসে

    ২) ত্বক উজ্জ্বল রাখতে একটি ডিমের কুসুম, এক চামচ ঘন ক্রিম এবং এক চামচ গাজরের রস মিশিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে নিন। এবার এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে কুসুম গর্যানপ্যানই দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক উজ্জ্বল করে তুলবে।

    ৩) শুষ্ক ত্বকের জন্য প্রথমে একটি ডিম নিয়ে তার থেকে কুসুম আলাদা করে নিন। এবার এই কুসুমটির সঙ্গে এক চামচ মধু ভালো করে মিশিয়ে নিন। মুখে ভালো করে ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলে এই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে নিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট বাদে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি শুষ্ক ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।

    ৪) মুখের অন্যান্য সমস্যার মধ্যে একটি সমস্যা হল ব্ল্যাকহেডেস। এরজন্য একটি ডিমের কুসুমকে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এরপর তা ব্রাশে করে নাকের চারপাশে লাগিয়ে নিন। এরপর একটি টিসু পেপার লাগিয়ে নিন নাকের ওপর। ডিমের প্রথম লেয়ারটি শুকিয়ে গেলে আরেকটি লেয়ার লাগিয়ে নিন। এরপর শুকিয়ে গেলে কাগজ গুলোকে টেনে তুলে ফেলুন। দেখবেন কাগজের সঙ্গে ব্ল্যাকহেডসও উঠে আসবে।

     

  • পুষ্টি ও ঔষধিগুণে ভরপুর লটকন

    পুষ্টি ও ঔষধিগুণে ভরপুর লটকন

    লটকন এক প্রকার দেশীয় ও হলুদ রঙের ছোট্ট গোলাকার ফল। টক-মিষ্টি ফল লটকন খেতে ভালোবাসেন অনেকেই। ইংরেজিতে লটকনকে বলা হয় বার্মিজ গ্রেপ। টক-মিষ্টি রসালো এই ফলটি ছোট হলেও এটি পুষ্টি ও ঔষধিগুণে ভরপুর। লটকন ফলকে সরাসরি খাওয়া হয় বা জ্যাম তৈরি করেও খাওয়া যায়। লটকন স্বল্প সময়ের ফল। বর্ষা মৌসুমে এই ফলটি বাজারে সহজলভ্য হয়। এখন রাস্তাঘাটে সব জায়গায় মিলছে এই ফলটি।

    এই ফলটির আবার বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে। যেমন- হাড়ফাটা, ডুবি, বুবি, কানাইজু, লটকা, লটকাউ, কিছুয়ান ইত্যাদি। লটকন গাছ দক্ষিণ এশিয়ায় বুনো গাছ হিসেবে জন্মালেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বাণিজ্যিক চাষ হয়। ক্যালরি ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল লটকন।

    চলুন জেনে নেওয়া যাক লটকনের স্বাস্থ্য গুণাগুণগুলো

    >> লটকনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ আছে। ভিটামিন সি ত্বক, দাঁত ও হাড় সুস্থ রাখে। সিজনের সময় প্রতিদিন দুই-তিনটি লটকন খাওয়া মানেই আমাদের দৈনন্দিন ভিটামিন ‘সি’র চাহিদা পূরণ হওয়া। এ ছাড়া এই ফলে চর্বি অত্যন্ত কম থাকায় ও কোনো শর্করা নেই বিধায় সব বয়সের মানুষ নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।

     

    >> পরিপক্ব লটকনের প্রতি ১০০ গ্রাম শাঁসে আছে ১.৪২ গ্রাম আমিষ, ০.৪৫ গ্রাম চর্বি, ০.৯ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ০.৩ গ্রাম লৌহ এবং ৯১ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি।

    >> লটকনে রয়েছে ০.০৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি১ এবং ০.১৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি২। সাধারণত লটকনকে ভিটামিন বি২ সমৃদ্ধ ফল বলা হয়ে থাকে। ভিটামিন বি২ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, যা শরীরের জন্য খুব প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। বেরিবেরি রোগ থেকে দূরে রাখে লটকন।

    >> রক্ত ও হাড়ের জন্য বিশেষ উপকারী লটকন। কারণ এতে থাকে আয়রন। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৫.৩৪ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে।

    >> খাদ্যশক্তির ভালো উৎস লটকন। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৯২ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায় যা আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

    >> লটকনের যেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে তেমনি তার ঔষধিগুণও রয়েছে। লটকন মানসিক অবসাদ দূর করতেও সাহায্য করে।

    >> লটকন টক মিষ্টি ফল, তাই এই ফল খেলে আমাদের মুখের স্বাদ বৃদ্ধি পায় এবং খাবারের রুচি বাড়ে।

    >> লটকন গাছের শুকনো গুঁড়ো পাতা ডায়রিয়া বেশ দ্রুত উপশম হয়। এর গাছের পাতা ও মূল খেলে পেটের ব্যথা ও পুরান জ্বর নিরাময় হয়। এমনকি গনোরিয়া রোগের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয় এ ফলের বীজ।

    >> লটকন খেলে বমি বমি ভাব দূর হয় সহজেই। তৃষ্ণাও নিবারণ করে। এর গাছের ছাল ও পাতা খেলে চর্মরোগ দূর হয়।

    >> প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনের কোয়ায় খাদ্যশক্তি থাকে প্রায় ৯২ কিলোক্যালরি। অবাক বিষয় হলো এতে ক্যালরি আছে আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠালের প্রায় দ্বিগুণ।

    >> লটকনে আছে প্রচুর পরিমাণে নানা ধরনের ভিটামিন ‘বি’। এতে ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ আছে যথাক্রমে ১০ দশমিক ০৪ মিলিগ্রাম এবং ০.২০ মিলিগ্রাম। ফলে পাকা লটকন খাদ্যমানের দিক দিয়ে খুবই সমৃদ্ধ।

    >> লটকনে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় কাজে লাগে। এইসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।