Category: ধর্ম

  • অভাবমুক্ত থাকার আমল

    অভাবমুক্ত থাকার আমল

    মাঝে মাঝে মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মহান আল্লাহ অভাব-অনটন, বিপদ-আপদ দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর আমরা তোমাদেরকে অবশ্যই পরীক্ষা করব (১) কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা। আর আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদেরকে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৫)

    অভাবমুক্ত থাকার আমল

    ১. আখিরাতকে প্রাধান্য দেওয়া : আখিরাতকে প্রাধান্য দিলে মহান আল্লাহ শান্তি দান করেন। আর দুনিয়াকে প্রাধান্য দিলে মহান আল্লাহ অভাব, হতাশা ইত্যাদি বাড়িয়ে দেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১০৭)

    ২. সংযত জীবনাচার : রাসুলের (সা.) যুগে যখন মদিনায় দুর্ভিক্ষ এসেছিল, তখন থেকে উম্মতকে বাঁচাতে সবাইকে তিনি জীবনাচারে সংযত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইবনে ওমর (রা.) বলতেন, (অভাবের দিনে) রাসুলুল্লাহ (সা.) কাউকে তার ভাইয়ের অনুমতি ছাড়া একসঙ্গে দুটি করে খেজুর খেতে নিষেধ করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ২৪৫৫)

    ৩. কঠিন সময়ে ধৈর্য ধারণ : দুঃসময়ে ধৈর্য ধারণও এক ধরনের নেক আমল এবং এটি একটি ফরজ ইবাদত। খাদ্যসংকট বা দুর্দিনে রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম ধৈর্যসহকারে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতেন।

    ৪. গুনাহ ছেড়ে দেওয়া : রিজিকের অভাব-অনটনের একটি কারণ হচ্ছে পাপাচার। তাই রাসুল (সা.) উম্মতদের অভাব-অনটন থেকে বাঁচাতে পাপাচার থেকে দূরে থাকার তাগিদ দিতেন। সাওবান (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ তার পাপকাজের কারণে তার প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০২২)

    ৫. বেশি পরিমাণ দোয়া করা : অভাব-অনটন এবং দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা পাওয়ার আরেকটি আমল হলো বেশি বেশি দোয়া করা। মহান আল্লাহর কাছে অতীতের গুনাহগুলো থেকে তওবা করে, পরিস্থিতি অনুকূলে এনে দেওয়ার জন্য দোয়ায় মগ্ন হয়ে যাওয়া। অনেক ক্ষেত্রে দোয়ার মাধ্যমেও বহু সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। রাসুল (সা.) দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি পেতে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করেছিলেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৬৪)

     

  • বিপদে ধৈর্য ধারণ করার প্রতিদান

    বিপদে ধৈর্য ধারণ করার প্রতিদান

    বিপদ মানুষকে আল্লাহর দিকে ধাবিত করে। বান্দার ওপর যখন বিপদ আসে তখন সে আল্লাহর কাছে ফিরে আসে। তাই আল্লাহ বান্দাকে ছোট-বড় বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যারা তাদের ওপর বিপদ এলে বলে, আমরা তো আল্লাহরই। আর নিশ্চয়ই আমরা তার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।

    পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)

    বিপদে ধৈর্য ধারণ করার প্রতিদান

    কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা তাদের রবের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সবর করে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদের যে রিজিক প্রদান করেছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং ভালো কাজের মাধ্যমে মন্দকে দূর করে, তাদের জন্যই রয়েছে আখিরাতের শুভ পরিণাম। স্থায়ী জান্নাতসমূহ, যাতে তারা এবং তাদের পিতৃপুরুষগণ, তাদের স্ত্রীগণ ও তাদের সন্তানদের মধ্যে যারা সৎ ছিল তারা প্রবেশ করবে। আর ফেরেশতারা প্রতিটি দরজা দিয়ে তাদের নিকট প্রবেশ করবে। তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, কারণ তোমরা ধৈর্য ধারণ করেছিলে। কতই না উত্তম পরকালের এই ঘর!’ (সুরা আর-রাদ, আয়াত ২২-২৪)

    আনাস ইবনু মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রকৃত ধৈর্য ধারণ করা হলো বিপদ-আপদের প্রথম মুহূর্তে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২০১১)

    আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, কিছুসংখ্যক আনসার সাহাবি রাসুলুল্লাহর (সা.) নিকট কিছু চাইলে তিনি তাদের দিলেন। পুনরায় তারা চাইলে রাসুল (সা.) তাদের আবারও দিলেন। এমনকি তার (রাসুল সা.) নিকট যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, আমার নিকট যে মাল থাকে তা তোমাদের না দিয়ে আমার নিকট জমা রাখি না। তবে যে যাঞ্চা (প্রার্থনা, যাচনা) থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখেন। আর যে পরমুখাপেক্ষী না হয়, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহ তাকে সবর দান করেন। সবরের চাইতে উত্তম ও ব্যাপক কোনো নিয়ামত কাউকে দেওয়া হয়নি। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৩৮৪)

    আবু সাঈদ খুদরি ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুসলিম ব্যক্তির ওপর যেসব যাতনা, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আপতিত হয়, এমনকি যে কাটা তার দেহে বিদ্ধ হয়- এসবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫২৩৯)

     

  • রাসুল (সা.) যাকে সবচেয়ে বড় কৃপণ বলেছেন

    রাসুল (সা.) যাকে সবচেয়ে বড় কৃপণ বলেছেন

    একজন মুমিনের আমলের পাল্লা ভারী করতে এবং নবিজি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় হতে বেশি বেশি দরুদ পড়া উচিত। যে ব্যক্তি নবিজির প্রতি দরুদ পড়ে না এবং কোথাও রাসুল (সা.)-এর নাম উচ্চারণ হলে দরুদ না পড়ে চুপ থাকে, তাকে হাদিসে কৃপণ বলা হয়েছে।

    হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলাম। তিনি বললেন, ‘তোমাদেরকে কি বলে দেব না, সবচেয়ে বড় কৃপণ কে?’ সবাই বললেন, ‘অবশ্যই হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, ‘যার সামনে আমার নাম উল্লেখ করা হল, অথচ সে (আমার নাম শুনেও) আমার প্রতি দরুদ পড়ল না, সেই হল সব চাইতে বড় কৃপণ।’ (আত তারগীব, হাদিস, ১৬৮৪)

    হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ নবির ওপর রহমত অবতীর্ণ করেন এবং ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দোয়া করেন। সুতরাং হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি দরুদ পড়ো এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও। (সুরা আহজাব, আয়াত : ৫৬)

    রাসুল (সা.) প্রতি দরুদ পাঠের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবিজি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ প্রেরণ করবে আল্লাহতায়ালা তার ওপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। (সহিহ মুসলিম)।

    রাসূলের প্রতি দরুদ পাঠকারী ব্যক্তি কেয়ামতের দিন রাসূলের কাছে থাকবে। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কেয়ামত দিবসে লোকদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আমার অধিক নিকটতম হবে, যে ব্যক্তি তাদের মধ্যে আমার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করবে। (তিরমিজি)।

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ পড়লে ফেরেশতারা তা তার কাছে পৌঁছিয়ে দেন। এক হাদিসে হজরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘পৃথিবীতে মহান আল্লাহর ভ্রমণরত বহু ফেরেশতা রয়েছেন, যারা আমার উম্মতের কাছ আমাকে সালাম পৌঁছে দেন।’ (আহমাদ ৩৬৬৬, ৪২১০, ৪৩২০, নাসাঈ ১২৮২, ইবনে হিব্বান ৯১৪, তারগীব ১৬৬৪ নং)

     

  • অতিবৃষ্টি থেকে বাঁচার দোয়া

    অতিবৃষ্টি থেকে বাঁচার দোয়া

    আল্লাহর অসংখ্য নেয়ামতের মধ্যে একটি হলো বৃষ্টি। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ থেকে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে তোমাদের জীবিকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফলমূল উৎপন্ন করেন।’ তবে অতি বৃষ্টির ফলে বন্যা, ভূমিধস, পাহাড়ধসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। তাই অতি বৃষ্টি থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত।

    অতিবৃষ্টি থেকে বাঁচার দোয়া

    হযরত আনাস (রা.) বলেন, একবার জুমার দিন রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন এক সাহাবি মসজিদে ঢুকে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, (অনাবৃষ্টির কারণে) জীবজন্তু মরে গেছে। পথ বন্ধ হয়ে গেছে। আল্লাহ তাআলার কাছে আমাদের জন্য বৃষ্টির দোয়া করুন।’ তখন রাসুল (সা.) দুই হাত উঠিয়ে দোয়া করতে শুরু করেন,

    ‘আল্লাহুম্মাসকিনা, আল্লাহুম্মাসকিনা, আল্লাহুম্মাসকিনা।’

    অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমাদের বৃষ্টি দান করুন। হে আল্লাহ, আমাদের বৃষ্টি দান করুন। হে আল্লাহ, আমাদের বৃষ্টি দান করুন।’

    আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর কসম! তখন আকাশে বিন্দুমাত্র মেঘের ছোঁয়াও ছিল না, রাসুলের (সা.) দোয়ার পর আকাশে মেঘের উদয় হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো আকাশ মেঘে ছেয়ে যায়। এরপর মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয়।

    বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর কসম! পরের ছয় দিন আমরা সূর্য দেখিনি। পরের জুমায় ফের ওই ব্যক্তি যখন মসজিদে প্রবেশ করেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবা দিচ্ছিলেন। ওই ব্যক্তি আরজ করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, ধনসম্পদ সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পানিতে পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার দোয়া করুন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) দুই হাত উঁচিয়ে দোয়া করলেন,

    ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার।’

    অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ, পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোয় বৃষ্টি দিন।’

    আনাস (রা.) বলেন, তখনই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়, এরপর আমরা নামাজ শেষে রোদের মধ্যে বের হই।

     

  • কোটা বাতিল আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই: প্রধানমন্ত্রী

    কোটা বাতিল আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই: প্রধানমন্ত্রী

    পড়াশোনা বাদ দিয়ে উচ্চ আদালতের রায় অমান্য করে কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    রোববার (৭ জুলাই) গণভবনে যুব মহিলা লীগের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা বাতিল করার আন্দোলন করছে। যারা এর আগে আন্দোলন করেছিল, তার আগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় কত পাস করত, এখন কত করছে। এটা সাবজুডিস ম্যাটার, আদালতে বিচারাধীন।

    প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা সময় নষ্ট করছে। এ আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

    তিনি বলেন, যুব মহিলা লীগ সবসময় আন্দোলন সংগ্রামে ছিল। যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীদের অকথ্য নির্যাতন করেছে বিএনপি-জামায়াত।

    সরকারপ্রধান বলেন, ক্ষমতায় আসার পর দেশকে একটি উচ্চ আসনে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে আওয়ামী লীগ। অপরদিকে ভোট চুরির অপরাধে দুইবার ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন খালেদা জিয়া।

    এ সময় যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।