Category: অর্থনীতি

  • ভেঙে ফেলা হচ্ছে শঠিবাড়ীতে অবস্থিত সোহাগ সিনেমা হল।

    ভেঙে ফেলা হচ্ছে শঠিবাড়ীতে অবস্থিত সোহাগ সিনেমা হল।

    মোঃ সুজা উদ্দিনঃ

    রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ী বাজার রংপুর- ঢাকা মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত একসময়ের জনপ্রিয় সিনেমা হল সোহাগ। কালের পরিক্রমায় হলটির জৌলুশ হারিয়েছে।শঠিবাড়ী ও মিঠাপুকুর মিলে তিনটি সিনেমা হল ছিলো। এর আগেই দুটো সিনেমা হল ভেঙে ফেলেছেন মালিক পক্ষ।

    জানা যায়,নব্বইয়ের দশকে দেশে প্রায় ১ হাজার ২৫০ সিনেমা হল ছিল। সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে একশত এর নিচে।

    স্থানীয়রা জানান, সিনেমা হলের পরিবেশ, রুচিসম্মত ছবির অভাব,আর ঘরে ঘরে টেলিভিশন চলে আসায় এ ব্যবসায় ধস নেমে গেছে অনেক আগেই। অথচ এক সময় এ সিনেমা হলটিই ছিলো এ এলাকার কিছু মানুষের আনন্দ-বিনোদনের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র।

    কর্তৃপক্ষ সিনেমা হলটি ভেঙে কি তৈরি করবে সেটা স্পষ্ট এখনো জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ভেঙ্গে ফেলা সিনেমা হলের এই জায়গাটিতে বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা হতে পারে ।

     

  • কমছে জ্বালানি তেলের দাম, নতুন দাম কার্যকর আজ থেকে

    কমছে জ্বালানি তেলের দাম, নতুন দাম কার্যকর আজ থেকে

    নিউজ ডেস্কঃ

    আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ গত মার্চ থেকে শুরু করেছে সরকার। সেই হিসাব অনুযায়ী প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হচ্ছে। এবার ষষ্ঠ দফায় আগামী সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ঘোষিত দামে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমেছে ১ টাকা ২৫ পয়সা। পেট্রল ও অকটেনের দাম কমেছে ৬ টাকা।
    জ্বালানি তেলের এই নতুন দাম আজ ০১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। এর আগে আগস্ট মাসে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত ছিল।

    জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে গত কাল শনিবার প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা।

    পেট্রলের নতুন দাম প্রতি লিটার ১২৭ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১২১ টাকা ও অকটেনের দাম ১৩১ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১২৫ টাকা।
    জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের সূত্র নির্ধারণ করে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি। এতে বলা হয়েছে, দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রল ব্যক্তিগত যানবাহনে অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। তাই বাস্তবতার নিরিখে বিলাসদ্রব্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে সব সময় ডিজেলের চেয়ে অকটেন ও পেট্রলের দাম বেশি রাখা হয়।

    অকটেন ও পেট্রল বিক্রি করে সব সময় মুনাফা করে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। মূলত ডিজেলের ওপর বিপিসির লাভ-লোকসান নির্ভর করে। দেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের ৭৫ শতাংশই ডিজেল।
    জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি। আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
    (তথ্য সূত্র – সংগ্রহীত)

  • কেমন চলছে বর্তমান বাংলাদেশ?

    কেমন চলছে বর্তমান বাংলাদেশ?

    মোঃ সুজা উদ্দিনঃ

    ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশত্যাগে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
    এর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হলো অন্তর্বর্তী সরকার। শপথ নিলেন সকল উপদেষ্টারা।

    গণঅভ্যুত্থানের পর এ যেন এক নতুন বাংলাদেশ। দেশের জনগণ সবাই তাকিয়ে আছে উপদেষ্টামণ্ডলীর দিকে, অনেক অনেক জনপ্রত্যাশা।অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে দেশের পুরো সিস্টেমের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার হচ্ছে। সেটা চলমান রয়েছে বটে।

    এর’ই মাঝে দেশের তিন দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা চলমান রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ জনগণ বন্যার্তদের জন্য আর্থিকভাবে এগিয়ে এসেছেন।

    নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে রোডম্যাপ বা রূপরেখা তৈরি করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

    এদিকে দেশের জাতীয় নির্বাচন এবং বিভিন্ন খাতে সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব ব্যাপক ভিত্তিক সংলাপ চেয়েছে বিএনপি। এই সংলাপ শুরুর ব্যাপারে যাতে ঘোষণা দেওয়া হয় সে ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অনুরোধ করেছে দলটি।

    অন্য দিকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়েছে।

    জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপি নির্বাচনের জন্য আলটিমেটাম দিয়েছিল আবার এখন রোডম্যাপ দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছে। পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি, বিএনপির জায়গা থেকে যেটি উত্তম মনে করেছে, সেটিই তারা করেছে।
    সাড়ে ১৫ বছরে দেশে অনেক জঞ্জাল সৃষ্টি হয়েছে। সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চরমভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। যার কুফল ১৫ বছরে জাতি ভোগ করেছে। এতগুলো জঞ্জাল ঠিক করা ৩ মাসে সম্ভব হবে না বলে মনে করেন না ডা. শফিকুর রহমান।
    বিএনপি নির্বাচনের জন্য তোড়জোড় করছে আমরা এই মুহুর্তে নির্বাচনকে প্রাধান্য দিচ্ছি না। এসময় জাতির ক্রাইসিস রক্তের দাগ, ক্ষতবিক্ষত হওয়া শহিদ পরিবারগুলো, বিভিন্ন জেলায় বন্যার কবলে পড়ে পড়েছে। এটাকে আমরা এই মুহূর্তের রাজনীতি হিসেবে নিয়েছি।  এটাকে কেউ যদি রাজনীতি বলে রাজনীতি, আবার কেউ যদি বলে মানবিক দায়িত্ব তাহলে মানবিক দায়িত্ব।
    আমরা মনে করি, এ বিষয়গুলো সমাধান না করে নির্বাচনের কথা তোলা, যৌক্তিক মনে করি না।  তাই আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলছি না। মানুষের এ বিষয়গুলো সমাধান করার জন্য আল্লাহ আমাদের যতটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন সেটুকু চেষ্টা করে যাব।

    নির্বাচনের দাবি করায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আসা কটাক্ষ ও সমালোচনার জবাব দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ‘বিরাজনীতিকরণের’ চেষ্টার কথা তুলে ধরেছেন।
    এখন নির্বাচনের দাবি জনগণ মেনে নেবে না বলে জামায়াতের পক্ষ থেকে আসা বক্তব্যের বিপরীতে তিনি বলেছেন, যারা ভোটে জিততে পারবে না, সরকার চালাতে পারবে না, তারা এসব কথা বলে।

    তবে অন্তর্বর্তী সরকার কবে নির্বাচন দেবে – এই প্রশ্নে এখন বিএনপি ও জামায়াত বিপরীতমুখী অবস্থানে।

    আর এদিকে সাধারণ জনগণের মধ্যে দেখা মিলেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার।
    অনেকই বলছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হোক নিরপেক্ষ হোক এতে যে কোন দল ক্ষমতায় আসুক জনগন গ্রহণ করে নিবে।
    আবার কেউ বলেছেন, ডঃ ইউনুস হলেন বাংলাদেশের মানুষের সুখ পাখি সরকার। পাঁচ বছর এই সুখ পাখি সরকার থাকবেন।

    ফেসবুকে একজন বলেছেন, ১৫ বছরে ভোট দিতে পারিনি। প্রয়োজন হলে আরো ১০ বছর ভোট দিবো না। আমাদের এই মুহূর্তে ভোট অধিকারের প্রয়োজন না। আমাদের প্রয়োজন একটা জবাবদিহি মূলক সুশাসন। একটা আত্মনির্ভরশীল সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ।

     

     

  • মাইনকার চিপায় ওরা! দেশপ্রেমের বিকাশ হোক সবার অন্তরে

    মাইনকার চিপায় ওরা! দেশপ্রেমের বিকাশ হোক সবার অন্তরে

    মোঃ সুজা উদ্দিনঃ

    আমাদের দেশে ‘মাইনকার চিপা’ বলে একটা কথা প্রচলিত রয়েছে। কোথা থেকে কথাটির উৎপত্তি আমার জানা নেই। তবে কথাটির অর্থ অনেকেরই জানা।

    এটা নিয়ে একটি গানও রয়েছে –
    জনপ্রিয় বাংলাদেশি কণ্ঠশিল্পী হায়দার হোসেনের। “আমি ফাইসা গেছি, আমি ফাইসা গেছি,আমি ফাইসা গেছি, মাইনকার চিপায়।আমারও দিলের চোট বোঝে না কোনো হালায়।

    মুলত, ‘মাইনকার চিপা’ বলতে এমন এক অসহনীয় অবস্থার কথা বোঝায়, যখন কারও ওপর বিপরীতমুখী ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে সৃষ্টি হওয়া ‘অবস্থার-চাপ’ এমনই বোঝা হয়ে ওঠে যে, তার পক্ষে কোনোদিকে এদিক-সেদিক করেও শান্তি পাওয়ার পথ থাকে না। এটি একটি মারাত্মক ও অনতিক্রমযোগ্য উভয় সংকটের দুঃসহ পরিস্থিতি।

    বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে টিকতে না পেরে শেখ হাসিনা ৫ আগষ্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান, সেনাপ্রধান অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে ৮ আগস্ট ২০২৪ এ ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে  অন্তবর্তীকালীন সরকার শপথ গ্ৰহণ করে।

    শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও পালাতে পারিনি অনেক বড় বড় আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা! পর্যায়ক্রমে অনেকেই গ্রেফতার হচ্ছেন প্রশাসনের হাতে।
    শেখ হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে দেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে তৈরি হয়েছিলো অসংখ্য আওয়ামী পাতি-নেতা। শহর-বন্দর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত এদের কার্যক্রম ছিলো অতি জঘন্য। মফস্বল কেন্দ্রিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা গুলোতে নিয়োগ বানিজ্য, অধিকাংশ প্রাইমারি স্কুলগুলোতে অক্ষর জ্ঞানহীন অদক্ষ সভাপতি বানানো। সরকারি খাস জমি দখল,চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ধর্ষন,  মাদকের কারবার সহ কি না করতো তারা।

    এ সমস্ত পাতি নেতারা  ৫ আগষ্টের পর হতে পড়ে গেছে মাইনকার চিপায়! শহর-বন্দর,হাটে-বাজারে, রাস্তা-ঘাটে কোথাও দেখা মিলেছেনা তাদের। চিপায় পড়ে গেছে। একদম মাইনকার চিপায়।

    এবার আসুন বাস্তব কিছু কথা-বার্তায়ঃ
    দেশকে ভালবাসা মানুষের জন্মগত প্রবৃত্তি। আমরা এ সম্পর্কে সচেতন না থাকলেও এটা আমাদের হৃদয়ের গভীরে সুপ্ত থাকে। দেশের অপমান, দেশবাসীর দুঃখ-দৈন্যে, দেশের দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে, দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হলে, দেশকে নিয়ে কেউ উপহাস বা কটাক্ষ করলে এ অনুভূতি জেগে উঠে।

    ১৯৭১ সালের মতো ২০২৪ সালে এসেও দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে। প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলো অকাতরে শত শত শিক্ষার্থীরা । মাটি ও মানুষের জন্যে গভীর মমতা না থাকলে এটা কোনোদিন সম্ভব হতো না। দেশপ্রেম থাকা চাই বৈদেশিক আগ্রাসনকে প্রতিহত করার জন্যে। ইতিহাস বার বার এটাই প্রমাণ করেছে যে, দেশপ্রেমিক জাতি শত্রুর কাছে কখনও পরাজিত হয় না। সে জাতির অন্তরে জ্বলতে থাকে দেশপ্রেমের আগুন অনির্বাণ শিখার ন্যায়।

    শুধু সংগ্রামী রূপ ধারণ করেই আবির্ভূত হয় না দেশপ্রেম। সত্যিকার দেশপ্রেম হচ্ছে দেশকে গড়ে তোলার সাধনা করা। দেশের সচেতন নাগরিকদের কারো অজানা নয় যে, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করাটাই কঠিন। দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলাটাই দেশবাসীর লক্ষ্য হওয়া উচিত।

    আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, দেশপ্রেম ঈমানেরই অঙ্গ।
    আসুন সকলে মিলে দেশটা নতুন করে সাজাই। প্রতিশোধের নেশায় পড়ে কারো বাড়ী ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আঘাত  না করি। প্রতিশোধের ভিতর কোনো কল্যাণ নেই। ক্ষমা করে দেওয়াই উত্তম।

    যদি কাউকে শাস্তি পেতে হয়, তবে সেটা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী হবে। আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই।

    লেখকঃ সাংবাদিক, মোঃ সুজা উদ্দিন

  • জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণের আশায় দালালচক্রের রাস্তার দু’ধারে নতুন স্থাপনা নির্মাণ।

    জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণের আশায় দালালচক্রের রাস্তার দু’ধারে নতুন স্থাপনা নির্মাণ।

    মোঃ সুজা উদ্দিনঃ

    বামনডাঙ্গা (গাইবান্ধা)-শঠিবাড়ী-আফতাবগঞ্জ (দিনাজপুর) জেলা মহাসড়ক (জেড-৫০১৩) প্রশস্থকরণ এর জন্য সরকার রাস্তার দু’ধারের জমি অধিগ্রহণ করবে। সেই জন্য জমি অধিগ্রহণসহ দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ। সেই আশায় নতুন করে রাস্তার দু’ধারে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন জমির মালিকগণ ও কয়েকটি দালালচক্র।
    নতুন করে জমি অধিগ্রহণকল্পে ক্রয় করা হবে জমি এবং ব্যবসায়ীকে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ। এ-সুযোগে কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মহাসড়কের দু’ধারে আবাদি ও পতিত জমিতে নিন্মমানের সামগ্রী দিয়েই নতুন করে বিল্ডিং, দোকান ঘর, মার্কেট নির্মাণ করেছেন।
    পুরাতন ও নবনির্মিত স্থাপনা গুলোর জন্য নতুন করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ এবং দোকান ঘর ভাঙ্গার ক্ষতিপূরণ নেওয়ার জন্য এ সমস্ত স্থাপনা নির্মান  করেছেন মহাসড়কের দু’ধারের পতিত জমির মালিকগণ ও কয়েকটি দালালচক্র।
    এমনকি বসতবাড়ি ভেঙ্গে তৈরি করা হয়েছে মার্কেট। এর ফলে মহাসড়কের দু’পার্শ্বে প্রতিদিন নতুন করে জেগে উঠা স্থাপনা চোখে পড়ছে। আগে যে জায়গা গুলো ফাঁকা পড়ে ছিল সেই জায়গাগুলোতেও তৈরি করা হয়েছে দোকান ঘর। অনেকেই কাগজে-কলমে দোকান ঘর ভাড়া নিচ্ছেন স্বার্থ হাসিলের আশায়।
    এর ফলে সচেতন মহলের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, চলছে চায়ের দোকানে আলোচনা কে কতো টাকা পাবে?
    যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য নতুন করে দোকান ঘর নির্মাণ ও ব্যবসায়ী হিসেবে ক্ষতিপূরণ নেওয়ার পায়তারা করছেন, এই দালালচক্রের বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টিআকর্ষণ ও জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতনমহল।
    সচেতনমহল আরো বলছেন, দেশ নতুন করে সাজানো হচ্ছে, এই দেশে আর কোন দুর্নীতি হতে দেওয়া যাবেনা।

  • বিনিয়োগকারিরা আস্থা রাখতে না পারায় ৭ ব্যাংকের শেয়ার দর ১০ টাকারও কম

    বিনিয়োগকারিরা আস্থা রাখতে না পারায় ৭ ব্যাংকের শেয়ার দর ১০ টাকারও কম

    পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আস্থার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো কাক্সিক্ষত ডিপোজিট না পাওয়ায় এ সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সঙ্কট, কম ঋণ আদায়, তারল্য সঙ্কট, মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ, মূলধন ও প্রভিশন ঘাটতিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই ব্যাংকগুলো। (আমার সংবাদ ০৩-০৭-২০২৪)

    এই সাতটি ব্যাংক হলো আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, এবি ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক।

    ঢাকা স্টক একচেঞ্জের সর্বশেষ লেনদেনের হিসেবে, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ার দর এখন ৯ টাকা ৮০ পয়সা, এনআরবিসি’র ৯ টাকা ৯০ পয়সা, এবি ব্যাংক ৬ টাকা ৬০ পয়সা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ৬টাকা ৫০ পয়সা, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক মাত্র ৩ টাকা ৩০ পয়সা, ওয়ান ব্যাংক ৬ টাকা ৪০ পয়সা ও ইউনিয়ন ব্যাংক ৭ টাকা।

    এদিকে চরম দুরাবস্থায় থাকা কিছু ব্যাংক নানাভাবে তাদেন ক্রেডিট রেটিং ‘এ প্লাস’ দাবি করে প্রচারণা চালায়। এতে বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হয়। ক্রেডিট রেটিং হলো কোনো ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা বা ঋণ নিলে ঠিক সময়ে পরিশোধ করার ক্ষমতা কতটা আছে সেটার মানদণ্ড। (সময়ের আলো ০২-০৭-২০২৪)

    শেয়ার বাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, কিছু লোকাল কোম্পানি এই ক্রেডিট রেটিং করে থাকে। অনেক সময় এসব রেটিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র পেতে হলে ডিপোজিট বেড়েছে কিনা সেটা দেখতে হবে। (রাইজিং বিডি ০৩-০৭-২০২৪)

    এ ব্যাপারে ডিএসই’র পরিচালক শরীফ আনোয়ার বলেন, শুধুমাত্র সাত ব্যাংক নয়, বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারদরই এখন ১০ টাকার নিচে। শেয়ারবাজারের অবস্থা ভালো হলে এগুলোর দর বাড়বে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে হবে। আর বিনিয়োগকারীদের ভালো ডিভিডেন্ড দিলে শেয়ারদরও বাড়বে।

  • সবজির বাজারে আগুন কী কিনবো বুঝতে পারছি না

    সবজির বাজারে আগুন কী কিনবো বুঝতে পারছি না

     বাজারে সবজির দাম যেন কমছেই না। সবজির পাশাপাশি চাল, ডাল, ডিম, মাছ, মাংসের দামও বেশি। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্তও সবজির দাম বেড়েছে। ৮০ টাকার নিচে কোন ধরণের সবজি নেই বললেই চলে।

    রোববার (৭ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল, কাটাসুর, হাতিরপুল, রামপুরা, সেগুনবাগিচাসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে, সেখানকার ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বাজারের এ চিত্র পাওয়া গেছে।

    এসময় সবজির দাম বেশি হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্রেতা মতিউর হোসেন। তিনি বলেন, সবজির বাজারে আগুন কী কিনবো বুঝতে পারছি না। সব সবজির দামই বেশি। কী রেখে কী কিনবো, সেটা বুঝতে পারছি না। সব সবজির দামই মোটামুটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

    কিছুদিন ঝাঁজ ছড়িয়ে সম্প্রতি কমতির পথে থাকলেও ফের বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি দরে। দাম কমেছে লেবুর, মাঝারি আকারের লেবুর হালি ২০ টাকা, বড় আকারের লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা হালি দরে।

    কিছুদিন আগেও পেঁপে ১০০ টাকা বিক্রি হলেও ৫০ টাকায় নেমে এসেছে।

    বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের থেকে জানা গেছে, কাঁচা কলার হালি ৫০ টাকা, গাজর ১৮০, টমেটো ১৪০ টাকা, শশার কেজি ৬০ টাকা, কচুর লতির কেজি ৬০-৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, কচুরমুখী ৯০ টাকা কেজি। সপ্তাহখানেক আগেও এসব সবজির দাম ছিলো ১০ থেকে ২০ টাকা কম ছিলো।

    বাজারে নতুন আসা শাপলা পাতা বিক্রি হচ্ছে ১৫-৩০ টাকা আটি। পাট শাক ১৫ টাকা, কুমড়ো-লাউ-পুঁই শাক ৩০ টাকা, লাল শাক ১৫ টাকা এবং কচুশাক ২০ টাকা আটি দরে বিক্রি হচ্ছে।

    মাছের বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের আমিষের চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা রাখা পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, তেলাপিয়া ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা, চাষের কই ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।

    এছাড়া, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাচকি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, ট্যাংরা ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, সিলভার কার্প ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, কাতল ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৬৮০ থেকে ১০০০ টাকা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।
    মাংসের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা। খাসির মাংস প্রতি কেজি ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।

  • জুনে মূল্যস্ফীতি কমলেও এখনো ৯.৫ শতাংশের বেশি

    জুনে মূল্যস্ফীতি কমলেও এখনো ৯.৫ শতাংশের বেশি

    বছরের জুনে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও এখনো দশমিক শতাংশের ওপরে আছে

    আজ রোববার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

    বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, জুনে খাদ্যপণ্যের দাম কমায় মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মে মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

    জুনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে, যা চলতি অর্থবছরের জন্য সরকারের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।

    মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গত বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ কয়েকবার সুদের হার বাড়ালেও এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে আছে।

    অর্থনীতিবিদরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতিতে আরও কড়াকড়ি আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন।

    ২০২২-২৩ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

    বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, জুনে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৪২ শতাংশে, যা মে মাসে ছিল ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

    একই সমেয় খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে, যা এক মাস আগে ছিল ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ।

    বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের তুলনায় জুনে গ্রামীণ ও শহর উভয় এলাকায় মূল্যস্ফীতি কমেছে।

     

  • খেলাপি ঋণের চাপে পর্যদুস্ত ১৪ নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান

    খেলাপি ঋণের চাপে পর্যদুস্ত ১৪ নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান

    খুব নাজুক অবস্থায় রয়েছে দেশের এই নন-ব্যাংক আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো (এনবিএফআই)। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই গ্রাহকদের অর্থ  সময়মতো ফেরৎ দিতে পারছে না। আস্থার সংকট তৈরি হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানে নতুন করে আমানতও রাখতে চাচ্ছেন না গ্রাহকেরা। এসব প্রতিষ্ঠানে গ্রাহক সংখ্যা কমেছে ১৭ শতাংশ। আয় কমেছে ১০.৪৪ শতাংশ।

    কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে ৩৫টি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের স্থিতি ছিলো ৭২ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা। খেলাপির হার ছিলো ২৯.৫৭ শতাংশ। রেড জোনে ছিলো ১৪টি এনবিএফআই। দুই বছর আগে ২০২১ সালে রেড জোনে ছিলো ১২টি।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন দুরাবস্থার পেছনে রয়েছে লুটেরা চক্র। তারা সরকারের উচ্চ মহলের ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু অসাধু কমকর্তার সঙ্গে যোগসাজসে নিয়ম না মেনে অর্থ ছাড় করে। খুঁটির জোর দেখিয়ে তারা আর ঋণ পরিশোধ করে না। উদাহরণ হিসেবে এসেছে পিপলস লিজিংয়ের কেলেঙ্কারির কথা।

    শীর্ষ ঋণখেলাপি পাঁচটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ: পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ৯৯.০২ শতাংশ, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি ৯৬.৮৫ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ৯৪.৭৬ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্স ৯৪.৪১ শতাংশ এবং জিএসপি ফাইন্যান্স ৯২.৩৭ শতাংশ।

    নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়া বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠানের অবস্থা আসলেই খারাপ। এদের অবস্থার রাতারাতি উন্নতিও হবে না। তবে খারাপ প্রতিষ্ঠানের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পিপলস, উত্তরা ও ইন্টারন্যাশনালের মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক বসানো হয়েছে।

  • রপ্তানি হিসাবে গরমিল, সরকারি তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সন্দেহ

    রপ্তানি হিসাবে গরমিল, সরকারি তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সন্দেহ

    দেশের রপ্তানি আয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়ে আসছিল সরকারি সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। সেই তথ্য সংশোধনের পর দেশের অর্থনীতির সূচকগুলো নিয়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার দেওয়া তথ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। রপ্তানি হিসেবে গরমিল প্রকাশ্যে আসার পর থেকে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

    পাশাপাশি অর্থনীতিবিদ ও গবেষকেরা মনে করছেন, ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অর্থনীতির নাজুক সময়ে নীতিনির্ধারকেরা যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেগুলোর কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতাও এর ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ কারণে ভুল রপ্তানি তথ্যের ভিত্তিতে হিসাব করা অর্থনীতির অন্য সূচকগুলোও সংশোধন দরকার। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পরিসংখ্যান কমিশন গঠনেরও দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ।

    রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সাম্প্রতিক সময়ের রপ্তানি তথ্য সংশোধনে দেখা যায়, গত দুই অর্থবছরের ১০ মাস করে মোট ২০ মাসে প্রায় ২৩ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার উধাও হয়ে গেছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে প্রকৃত তথ্য আড়াল করে ইপিবি রপ্তানির ভুল তথ্য প্রকাশ করে আসছিল। আর ইপিবির এই তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের হিসাব করে এসেছে।

    এই পরিপ্রেক্ষিতে রপ্তানির তথ্যে গরমিল ধরা পড়ায় মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি, মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিএনপি, লেনদেনের ভারসাম্য, বিদেশি ঋণ গ্রহণের নীতি সিদ্ধান্তসহ অর্থনীতির অনেক কার্যক্রমের সূচক সংশোধনের দাবি উঠেছে।

    দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীরা ইপিবির তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এসেছেন। বিভিন্ন সময়ে আইএমএফ থেকেও এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ইপিবির তথ্যে বড় পার্থক্য নিয়ে গণমাধ্যমেও রিপোর্ট হয়েছে। এত আলোচনা-সমালোচনার পরও বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ইপিবি কয়েক দফা বৈঠক করে এ সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সিদ্ধান্ত নেয় যে, এখন থেকে এই হিসাবের ক্ষেত্রে এনবিআরের তথ্যই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।

    অর্থনীতিবিদ ও গবেষকেরা কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এ ভুল তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের বিষয়টি নিছক ভুল হিসেবে দেখতে নারাজ । রপ্তানিকারকেরাও এ নিয়ে ছিলেন অসন্তুষ্ট। তাঁরা বলছেন, এটি নিছক কোনো ভুল নয়, এই ঘটনা তথ্য-উপাত্তের ধারাবাহিক কারসাজিরই প্রতিফলন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরের দায়িত্বে থাকা নেতৃত্ব জেনেবুঝে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে খুশি করতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্তগুলো ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়েছে। ভুল জেনেও রাজনৈতিক নেতৃত্বে এসব পরিসংখ্যান ব্যবহার করেছে তাদের রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ে। সাময়িকভাবে এর সুফল মিললেও শেষ পর্যন্ত তা দেশের ভাবমূর্তি ও তথ্য-উপাত্তের গ্রহণযোগ্যতাকে বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।

    এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি পরিসংখ্যান ও তথ্য-উপাত্তের নৈরাজ্য ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আমরা প্রশ্ন করে আসছিলাম। এখন সরকারি উদ্যোগেই রপ্তানির তথ্যে তার প্রমাণ মিলেছে। এ ধরনের ঘটনায় প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও সমন্বয়হীনতা এবং দক্ষ নেতৃত্বের অভাবের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। দেরিতে হলেও রপ্তানির তথ্য সংশোধন করা হয়েছে। এখন জিডিপি প্রাক্কলন থেকে শুরু করে অর্থনীতির অন্যান্য প্রক্ষেপণ বা পরিসংখ্যানের তথ্যগুলোও হালনাগাদ করার বাধ্যবাধকতা দেখা দিয়েছে।

    তথ্য ও পরিসংখ্যানের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে পরিসংখ্যান কমিশন গঠনেরও সুপারিশ করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, সরকারি তথ্য-উপাত্ত ও পরিসংখ্যান হচ্ছে রাষ্ট্রের পঞ্চম স্তম্ভ। সেখানে বিশ্বাসযোগ্যতার ঘাটতি দেখা দিলে তা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করে।